প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী দেশের প্রধান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করেন। এঁদের মধ্যে অনেকেরই সামর্থ্য থাকে না প্রাইভেট কার ভাড়া করে বিমানবন্দরের টার্মিনাল পর্যন্ত যেতে বা সেখান থেকে আসতে। ফলে লাগেজসহ তাঁদের পড়তে নানা ভোগান্তিতে। এমন সব যাত্রীর কথা মাথায় রেখে শাটল বাস সেবা চালু করেছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশন (বিআরটিসি)।

আজ বুধবার দুপুরে এই বাস সেবার উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মোহাম্মাদ ফারুক খান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম প্রমুখ।

সকাল থেকেই দেখা যায়, বিআরটিসির দুটি লাল-সবুজ এসি বাস বিমানবন্দরের টার্মিনাল-১-এর সামনে গাঁদা ফুল দিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। বাসগুলোর দুই পাশে বাধা রয়েছে লাল-সবুজ কাপড় ও বেলুন। বাসের ভেতরে নেই কোনো সাধারণ চেয়ার। দরজা দিয়ে ঢুকতেই হাতের বাঁদিকে চোখে পড়বে লাগেজ রাখার সারি। এগুলো তৈরি করা হয়েছে স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে। আর ডান দিকে তাকালে চোখে পড়বে ইউ আকৃতির সোফা। যেখানে অনায়াসে ৩০ থেকে ৩২ জন যাত্রী বসতে পারবেন।

বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরের সমন্বিত কেন্দ্রীয় মেরামত কারখানায় বিআরটিসি নিজস্ব কারিগরি দক্ষতায় প্রাথমিকভাবে এই দুটি বিশেষ শাটল বাস প্রস্তুত করা হয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিআরটিসি এখন লাভে আছে। আগামীতে এই যাত্রা আরও ভালো হবে। বিমানবন্দরের শাটল বাসের মাধ্যমে যাত্রীদের যাত্রা আরও সহজ হবে।

বিমানবন্দরের টার্মিনাল থেকে বের হয়ে প্রধান সড়ক বা বিমানবন্দর রেলস্টেশন পর্যন্ত যেতে পথের দূরত্ব প্রায় আধা কিলোমিটার। এই পথে চলাচল করতে টার্মিনালের যাত্রীদের অনেকটা চাপে রাখে একটি চক্র। তাদের থেকে সাধারণ যাত্রীদের রক্ষা করতেই এই ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। বিআরটিসির এই বাসে জনপ্রতি ২০ টাকা দিয়ে সেবা নিতে পারবেন যাত্রীরা। অতিরিক্ত লাগেজসহ ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ৫০ টাকা।

আপাতত দুটি বাস বিমানবন্দর থেকে বিমানবন্দর রেলস্টেশন ও বাসস্টেশন পর্যন্ত চলাচল করবে। বিমানবন্দর শাটল বাস সার্ভিসের রুট হচ্ছে বিমানবন্দর টার্মিনাল-২ থেকে যাত্রা শুরু করে বিমানবন্দর গোলচত্বর থেকে উত্তরা জসীমউদ্দীন রোড যাবে। পরে বিমানবন্দর রেলস্টেশন হয়ে বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ হয়ে বিমানবন্দর গোলচত্বর দিয়ে বিমানবন্দর টার্মিনাল-২ পর্যন্ত যাতায়াত করবে।

বিআরটিসি জানিয়েছে, দুটি বাস দিয়ে এই সার্ভিস চালু হলেও পরবর্তী সময় বাড়ানো হবে। প্রবাসী, রেমিট্যান্স যোদ্ধা, দেশি-বিদেশি পর্যটক ও সাধারণ যাত্রীদের বিমানবন্দরে যাতায়াত ও লাগেজ সামগ্রী পরিবহনের সুবিধার্থে বিআরটিসি বিমানবন্দরে এই শাটল বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এই বাসটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত লাগেজ পরিবহনের সুবিধা, পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা, ফ্রি ওয়াই ফাই এবং প্রবীণ ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের বাসে ওঠানামার বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।